ঢাকা,   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

The South Asian Times | সাউথ এশিয়ান টাইমস
Header Advertisement
১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে বলেছেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৯৭১ সালে তার স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। তিনি বলেন, "বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ওয়ারলেসের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল এবং দলের লোকেরা তা দেশের সব জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু তাকে হত্যার পর ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।" প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হবার আগে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান যা ইপিআর এর ওয়্যারলেস, টেলিগ্রাম-টেলিপ্রিন্টার এবং দলের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। অথচ ’৭৫ এ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর এই ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো হয়। তিনি বলেন,“কোন এক মেজর একটি ড্রামের উপর দাঁড়িয়ে বাঁশিতে ফুঁক দিল আর অমনি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেল! এভাবে একটি দেশ স্বাধীন হয় না। এখনো ইতিহাস বিকৃতির সেই ভাঙা রেকর্ড তারা (বিএনপি) বাজিয়েই যাচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ ‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ঐহিতাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার জন্য এবং যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। তিনি আগে আক্রমনকারী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত হতে চাননি বিধায় অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ধাপে ধাপে সবরকম প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলেন। তিনি বলেন, ২৫ মার্চ অকস্মাৎ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিরীহ জনগণের ওপর আক্রমন শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণা তৎকালীন ইপিআর (বর্তমান বিজিবি) এর ওয়্যারলেস যোগে দেশব্যাপী প্রচার করা হয়। সুবেদার মেজর শওকত আলী সহ চারজনের কাছে এই বার্তাটি আগেই পাঠিয়ে দেওয়া ছিল। ওয়্যারলেস ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশে যখন ইপিআর মেসেজ পাঠাচ্ছিল তখন ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজার বাগ পুলিশ লাইনের পাশাপাশি পিলখানা এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনও পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ করে, গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু ওয়্যারলেস, টেলিগ্রাম-টেলি প্রিন্টার ও পুলিশ স্টেশনের মাধ্যমে মাধ্যমে সারাদেশে এই বার্তাটা ছড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে সারাদেশে এটি প্রচার করে এবং সুবেদার শওকত সহ বার্তা প্রচারকারীরা ধরা পড়ে যায় এবং নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে শাহাদাত বরণ করেন। আর এই ইতিহাসকে ৭৫ এর পরে বিকৃত করা হয়েছে। প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করে একটি ভিন্ন ইতিহাসকে সামনে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখনো ইতিহাস বিকৃতির সেই ভাঙা রেকর্ড তারা (বিএনপি) বাজিয়েই যাচ্ছে। তার কারণও আছে। আজকে যিনি বলেন একাত্তরের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ নেতার সব পালিয়ে যান, সেই মঈন খানের বাবা মমিন খান খাদ্য সচিব ছিলেন। যিনি খাদ্য সচিবের দায়িত্ব পালনকালে ৭৪ এর কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টিতে সফল হওয়ায় পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করলে তার দ্বারা পুরস্কৃত হয়ে মন্ত্রীর মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা হয়েছিলেন। অথচ ৭৫ এর পর থেকে সারা বছরই বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে প্রবাস জীবন থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলে জোর করে দেশে ফেরার পর তিনি বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরেছেন এবং বছরের পর বছর দুর্ভিক্ষ দেখতে পেয়েছেন । তিনি বলেন, ৭০ এর নির্বাচনে বিজয়ী জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সংসদ সদস্যরাই কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন করেন। যার রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ সহ সরকারের সদস্যরা মুজিবনগরে শপথ নেন এবং জাতির পিতা কারাগারে অন্তরীন থাকায় তারা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য তৎকালীন সরকার বাংলাদেশকে বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ করে একেক জনকে এক একটি সেক্টরের দায়িত্ব দেয়। সেক্টরের যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনি আহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমান একটি সেক্টরের দায়িত্ব পান। জিয়াউর রহমান সেখানেতো একজন বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিল জিয়াউর রহমান। তাছাড়া জিয়া একজন সামান্য মেজর ছিলেন। এখান থেকে মেজর জেনারেল পর্যন্ত পদোন্নতি কিন্তু তাকে আওয়ামী লীগ সরকারই দিয়েছে। আর স্বাধীনতার আগে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে কার্যাদেশ পেয়ে পূর্ববঙ্গে দায়িত্ব পালনরত ছিলেন, তার জন্ম ছিল কলকাতায়, এরপর পরিবার করাচিতে চলে যায় এবং তার লেখাপড়া ও সেনাবাহিনীতে যোগদান সবকিছুই পাকিস্তানে ছিল। কাজেই তার মনে ঐ পাকিস্তানটাই রয়ে গেছে আর তার প্রমাণও আছে। শেখ হাসিনা বলেন, ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যখন এখানে গণহত্যা শুরু করে, তারা কিন্তু চট্টগ্রামেও হত্যাকা- শুরু করেছিল। যারা ব্যারিকেড দিচ্ছিল জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে, তাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। আর চট্টগ্রামে সেই সেনাবাহিনীর দায়িত্বে জিয়াউর রহমান ছিল এবং জিয়াউর রহমানও যারা সেই সময় ব্যারিকেড দিয়েছে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। শুধু তাই না, সোয়াত জাহাজ এসেছে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র নিয়ে, সেই অস্ত্র খালাস করতে গিয়েছিল জিয়াউর রহমান। সেখানে এই যে সংগ্রাম পরিষদের নেতা ও অন্যান্য সাধারণ জনগণ, তারা তাকে পথে আটকায়। তাকে যেতে দেয়নি, বাধা দিয়েছিল এবং সেখান থেকেই ধরে নিয়ে আসে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, যখন কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে সর্বপ্রথম ২৬ মার্চ দুপুর ২টা-আড়াইটার সময় মান্নান সাহেব, চট্টগ্রামের সেক্রেটারি ঘোষণা দেওয়া শুরু করে। একে একে আমাদের যারা নেতা সবাই ঘোষণা পাঠ করে। সে সময় জহুর আহমেদ সাহেব বলেন, আমাদের একজন মিলিটারি লোক দরকার। তখন মেজর রফিককে বলা হয়, তিনি তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আটকানোর জন্য অ্যাম্বুস করে বসে আছেন। তিনি বলেছেন, আমি এখান থেকে নড়লে এই জায়গাটা ওরা দখল করে নেবে। ওই সময় জিয়াউর রহমানকে ধরে আনা হয় এবং তাকে দিয়ে ২৭ তারিখ সন্ধ্যার পরে জাতির পিতার পক্ষে ঘোষণাটা পাঠ করানো হয়। কাজেই এটা নিয়ে বড়াই করার তো কিছু নেই! তারা এটা নিয়েই বড়াই করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং বর্ষিয়ান নেতা আমির হোসেন আমু, দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্যদের মধ্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুর রাজ্জাক ও শাজাহান খান, দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা জেলা সভাপতি বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড.আবদুস সোবহান গোলাপ ও সহ প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আওয়াল শামীম। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে আমি একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সে সময় পাকিস্তানি সামরিক অফিসার আসলাম বেগ বাংলাদেশে কর্মরত ছিল। পরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধানও হয়েছিল সে। এই আসলাম বেগ একটা চিঠি লিখেছিল জিয়াউর রহমানের কাছে। সেই চিঠিতে জিয়াউর রহমানের কার্যক্রমে সে সন্তুষ্টি জানিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, আসলাম বেগ আরো লিখেছেন, “সে তার কার্যক্রমে সন্তুষ্ট, তাকে ভবিষ্যতে আরও কাজ দেওয়া হবে। জিয়ার পরিবার তার স্ত্রী ও দুই ছেলে যে ভালোভাবে আছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সেই কথাটাও চিঠিতে জানিয়েছে। চিঠিটার কপিটা ছিল, পার্লামেন্টেও পাঠ করা হয়েছে। এটা ডকুমেন্ট হিসেবেও আছে।” তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমাদের গেরিলারা বিভিন্ন সেনা অফিসারদের পরিবারগুলোকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। তারা খালেদা জিয়ার কাছেও এসেছিল কিন্তু তিনি গেরিলাদের সঙ্গে না গিয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে চলে যান। শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ফেলল, তার বউ ছেলেকে হেফাজতে রেখে দিলো পাকিস্তানিরা আর আসলাম বেগ চিঠিতে জানাল জিয়ার কার্যক্রমে তারা সন্তুষ্ট, কেন সন্তুষ্ট জানেন? যতগুলো সেক্টরে যুদ্ধ হয়েছে, আপনারা হিসাব করে দেখেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সব থেকে বেশি হত্যা করা হয়েছে যেটার দায়িত্বে ছিল জিয়াউর রহমান। সব থেকে বেশি হতাহত ছিল সেখানে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরেকটি কথা না বলে পারছি না, দেখলাম বিএনপির এক নেতা চাদর খুলে আগুন দিচ্ছে ভারতীয় পণ্য ব্যবহার করবে না। এরপর আবার দেখা গেল, কিছু চাদর কিনে এনে পোড়ানো হলো। আচ্ছা শীতকাল তো চলে গেছে এখন চাদর পোড়ালে আর কী আসে-যায়। আমার প্রশ্ন, যে নেতারা বলছেন ভারতীয় পণ্য বর্জন করেন, তাদের বউদের কয়খানা ভারতীয় শাড়ি আছে। তাহলে বউদের কাছ থেকে সেই শাড়িগুলো এনে কেন পুড়িয়ে দিচ্ছেন না। আপনারা সবাই একটু এই কথাটা বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেতাদের বলব, যারা যারা ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন সবার বাড়িতে গিয়ে তাদের বউরা যেন কোন মতে কোন ভারতীয় শাড়ি না পরে; আলমারিতে যে কয়টা শাড়ি আছে সব এনে যেদিন ওই অফিসের সামনে পোড়াবেন সেদিন বিশ্বাস করব যে, আপনারা সত্যিকার ভারতীয় পণ্য বর্জন করলেন। আমাদের দেশে গরম মসলা, পেঁয়াজ, রসুন-আদা আমদানী করি। মিজোরাম থেকে আমরা আদা আনি। মসলাপাতি, আদা ভারত থেকে যা কিছু আসছে, তাদের কারও পাকের ঘরে যেন এই ভারতীয় মসলা দেখা না যায়। তাদের রান্না করে খেতে হবে এইসব মশলাবিহীন। কাজেই এটা তারা খেতে পারবেন কি না, সেই জবাবটা তাদের দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “আপনারা রঙ-ঢঙ-সঙ করতে ওস্তাদ, এটা আমরা আগেও দেখেছি। বাস্তব কথায় আসেন, আপনারা এই পণ্যগুলো সত্যিকার বর্জন করেছেন কি না, সেই কথাটাই আমরা জানতে চাই।” প্রধানমন্ত্রী তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করে বলেন, এ বুদ্ধিটা যখন অন্য খাতে চলে যায় তাদের মতিভ্রম হয়ে যায় তখন আর এর কোন দাম থাকে না, সেটা নির্বুদ্ধিতায় পরিণত হয়। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ায়। কোথায় পাবে তারা গণতন্ত্র? তাদের চোখে তো স্বৈরতন্ত্রের ঠুলি পরানো। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট এর পর দেশে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে প্রতি রাতে কারফিউ বলবৎ থাকতো। এমনকি তিনি ’৮১ সালে দেশে ফেরার পরও দেখতে পান রাত এগারোটার মধ্যে ঘরে ফিরতে হচ্ছে, সারারাত কারফিউ। এটাকে ‘কারফিউ গণতন্ত্র’ বা ‘মার্শাল ল’ গণতন্ত্র আখ্যায়িত করে বিএনপি এখন সে গণতন্ত্রই খুঁজে বেড়ায় কিনা সে প্রশ্ন ও তোলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি অদ্ভুত কান্ড আমরা দেখি- অতি ডান (ডানপন্থী) ও অতি বাম (বামপন্থী) তারা এখন এক জায়গায় হয়ে গেছে। তাদের আদর্শটা কি? তাদের নীতিটা কি? তারা কোন কিছুতেই ভালো খুঁজে পায় না। অতি বামে বেশ কিছু দল আছে তারা একেবারে বিপ্লব করবে। যে বিপ্লব করতে করতে তারা এখন ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গেছে।

নারায়ণগঞ্জে ইকোনোমিক জোন পরিদর্শনে ভুটানের রাজা

নারায়ণগঞ্জে ইকোনোমিক জোন পরিদর্শনে ভুটানের রাজা

ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক আজ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশালাইজড ইকোনমিক জোন (জাপান ইপিজেড) পরিদর্শন করেছেন। সকাল ১১ টায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তিনি জাপান ইপিজেডে এসে পৌঁছান। পরে বেজার কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। সেখানে বেজা কর্মকর্তারা ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুককে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কি কি সুবিধা ভুটান পাবে তা তুলে ধরেন। এরই মধ্যে ভুটানের রাজার বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে রংপুরের কুড়িগ্রামে ২১১ একর ভূমির উপর ভুটানকে একটি ইপিজেড করার জন্য জমি বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার জাপান ইপিজেডে বিনিয়োগকারীদের কি কি সুবিধা প্রদান করছে সেটি সরজমিনে দেখানো হয় ভুটানের রাজাকে। গ্যাস বিদ্যুৎ টেলিকম ব্যবস্থাপনাসহ সকল সুবিধার ওয়ানস্টপ সার্ভিস সুবিধার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। ভুটানের রাজাকে বেজার কর্মকর্তারা জাপান ইপিজেডে তুরস্কের বিনিয়োগে নির্মিত সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর কোম্পানি ঘুরে দেখান। জাপান ইপিজেড ঘুরে এবং সিঙ্গারের কোম্পানিটি দেখে ভুটানের রাজা বেশ খুশি হয়েছেন বলে জানান বেজার চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, ভুটানের সাথে রংপুরের কড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জায়গা বরাদ্দ দেয়ার জন্য এরই মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ওই ইপিজেডে ভুটান কি ধরনের ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণ করবে সেটি ধারণা নিতেই বাংলাদেশ স্পেশালাইজড ইকোনমিক জোন যেটি জাপানি ইকোনমিক জোন হিসেবে পরিচিত সেটি পরিদর্শন করেছেন। ভুটানের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। ভুটানে জমির পরিমাণ কম থাকায় তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। জাপানী রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশ স্পেশালাইজষ্ট ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধা দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভুটানের রাজা। জাপানের পাশাপাশি ভুটানও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। মূলত বিনিয়োগের পরিবেশ ও সার্বিক সুবিধার বিষয়টি দেখার জন্যই তিনি এই পরিদর্শন করেছেন। সিঙ্গারের ফ্যাক্টরিটি ভিজিট করে ভুটানের রাজা মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানান সিঙ্গার অথরিটি অফিসার হাকান। তিনি ভুটানের রাজাকে সিঙ্গার ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। হাকান বলেন, এই নির্মাণের সাথে বাংলাদেশের ৩০০ শ্রমিক কাজ করছে। এটি পুরোপুরি নির্মাণ শেষ হলে উৎপাদনের প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। এ দিকে বাসস`র মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনের আগে পদ্মাসেতু পরিদর্শন করেছেন। তিনি গাড়ি থকে নেমে সেতুর উপর টানা ১০ মিনিট অবস্থান করেন। বিশাল এই সেতুর পাশাপাশি চৈত্রে পদ্মার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন রাজা। বাঙালির সক্ষমতার স্মারক পদ্মা সেতু। শুধু বাঙালির মর্যাদার প্রতীকই নয় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও এই সেতু ঘিরে রয়েছে আলোচনা আর কৌতুহল। তাই ভূটানের রাজা পরিদর্শন করলেন এই সেতু। সেতুর মাঝামাঝি ১৮ নম্বর পিয়ারের কাছে গাড়ি থামিয়ে নেমে পরেন ভূটানের রাজা। তিনি টানা ১০ মিনিট ধরে সেতুতে অবস্থান করেন। পায়ে হাটেন সেতুতে, সেতু থেকে রৌদ্র উজ্জ্বল সকালে বসন্তে পদ্মার রুপ প্রত্যক্ষ করেন। এই সময় সেতুতে ছবিও তুলেন ভূটানের রাষ্ট্র প্রধান। পদ্মা সেতুতে ভিনেদশী রাজার আগমনে খুশি পদ্মা পারের মানুষ। জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক সেতুর সার্ভিস এরিয়া-২ এ গমন করলে সেতু কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন তাকে স্বাগত জানান। সেখানে সেতু সম্পর্কে ব্রিফ করেন প্রকল্প পরিরচালক। ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিল-সহ দেশটির অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রাজার আগমন উপলক্ষে পুরো সড়ক পথেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংবিধান শক্ত অবস্থানে রয়েছে : স্পিকার

সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংবিধান শক্ত অবস্থানে রয়েছে : স্পিকার

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংবিধান শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের চারটি মূলনীতি: গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র, যা সমতা ও সমঅধিকারকে উদ্বুদ্ধ করে। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্পিকার মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে সুইজারল্যান্ডের জেনেভার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ‘১৪৮তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলি’ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত ‘প্রটেকশন অব মাইনরিটি রাইটস’ শীর্ষক ইভেন্টে প্যানেল স্পিকার হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন। বক্তব্যের শুরুতেই স্পিকার বলেন, ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। এই দিন আমরা ১৯৭২ সাল থেকে স্বাধীনতার ৫৩তম বর্ষ উদযাপন করছি। এসময় তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সকল বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত একটি সমাজ গড়ে তোলাই রাষ্ট্রের লক্ষ্য যেখানে সকলের জন্য সমতা, আইনের শাসন, মৌলিক স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার সুরক্ষিত থাকবে। তিনি বলেন, সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩১ অনুচ্ছেদে আইনের দৃষ্টিতে সমতা, সকলের সমঅধিকার ও আইনের আশ্রয়লাভের অধিকারের বিষয়ে উল্লেখ আছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা, নারীর বিরুদ্ধে সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত কনভেনশনসহ সমস্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আইন গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ড. শিরীন শারমিন বলেন, বাংলাদেশে বৈষম্য বিরোধী একটি বিল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিলটি সমাজের সকল ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য বন্ধ করতে এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ, সম্প্রীতি ও সহনশীলতা বাড়াতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, খসড়া বিলটি সংসদে এলে তা সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে যাচাই-বাছাইয়ের পর মূল রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপিত হলে তা আইনে পরিনত হবে। তিনি বলেন, সকলকে মৌলিক মানবাধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে, সমান অধিকারকে সমুন্নত রাখতে হবে। আইনের সমান সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে। এসময় সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে শফিকুল ইসলাম এমপি, শাহাদারা মান্নান এমপি, নীলুফার আনজুম এমপি, মো. মুজিবুল হক এমপি, এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

ইউনেস্কো পুরষ্কার নিয়ে ইউনূস সেন্টারের তথ্য বিভ্রান্তিকর: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইউনেস্কো থেকে যে ‘ট্রি অব পিস’ পুরষ্কার পেয়েছেন বলে প্রচার করা হয়েছে তা প্রতারণামূলক এবং সর্বৈব মিথ্যাচার। এধরনের মিথ্যাচার দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে। শিক্ষামন্ত্রী আজ বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত এক মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ইউনেস্কোর সদর দফতরে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখান থেকে তারা আমাদের নিশ্চিত করেছেন ইউনেস্কো ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এ ধরনের কোন সম্মাননা প্রদান করেনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূস আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে গজনভি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ইসরায়েলের ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের তাঁকে ‘ট্রি অব পিস’ সম্মাননা স্মারক দিয়েছেন। ভাস্কর হেদভা সেরও নিশ্চিত করেছেন যে, এটি ইউনেস্কোর সম্মাননা বা পুরষ্কার নয়। এটি গজনবী ফাউন্শেন কর্র্তৃক প্রদত্ত একটি পুরষ্কার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইউনেস্কো সদর দফতরকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করবো। ড. ইউনূস ও ইউনেস্কোর নাম নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে সেটি অনৈতিক এবং অপরাধমূলক। সেটি আমাদের দেশের জন্য মানহানিকর-এ তথ্যও জানাবো।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইজরায়েলী ভাস্কর্য শিল্পীর দেওয়া পুরষ্কারকে ড.ইউনূস ইউনেস্কোর পুরষ্কার হিসেবে প্রচার করেছে। এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও অপমানকর বটে।’ শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘ইউনূস সেন্টারের ওয়েবসাইটে এটি ইউনেস্কোর পুরষ্কার হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। ইউনূস সেন্টারকে অনুরোধ করবো যে, এভাবে এ ধরনের ভয়াবহ মিথ্যাচার প্রচারণা থেকে তারা যেন বিরত থাকে, তা না হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। ’ এদিকে, আজ ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ট্রি অফ পীস’ পুরস্কার প্রদানের সংবাদটি সঠিক নয় এবং ইউনুস সেন্টার কর্তৃক দাবিকৃত সম্মাননা ইউনেস্কোর কোন পুরস্কার বা সম্মাননাও নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জুবাইদা মান্নান । তার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের সংবাদ প্রচারকে প্রতারণামূলক ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার বলে আখ্যায়িত করে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে ইউনূস সেন্টারকে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি ঢাকার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় এবং ইউনূস সেন্টারের অফিসিয়াল ওয়েব পেইজে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ট্রি অফ পীস’ পুরস্কার প্রদানের সংবাদটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন (বিএনসিইউ) এর দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ইউনূস সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে পত্রিকায় যে সংবাদ ছাপা হয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৬ মার্চ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ১১তম গ্লোবাল বাকু ফোরোমে ড. ইউনূসকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। কিন্তু ইউনেস্কো ঢাকা অফিস জানিয়েছে, প্যারিসস্থ ইউনেস্কো সদরদপ্তর এই বিষয়ে একেবারেই অবহিত নয়। ১১তম বাকু ফোরাম যেখানে এই সম্মাননা দেওয়ার সংবাদ প্রচার হয়েছে সেখানে ইউনেস্কোর কোন অফিসিয়াল প্রতিনিধিত্বই ছিল না। অধিকন্তু, ইউনূস সেন্টার কর্তৃক দাবিকৃত সম্মাননা ইউনেস্কোর কোন পুরস্কার বা সম্মাননাও নয়।’ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ড. ইউনুসকে ‘ট্রি অফ পিস’ নামক একটি ভাস্কর্য স্মারক/সম্মাননা প্রদান করেন ইজরাইলী ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের। মিজ হেদভা নিজে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ‘ট্রি অফ পিস’ প্রদানে ইউনেস্কোর কোন সম্পৃক্ততা ছিল না। নিজামী গনজবী ইন্টারন্যাশন্যাল সেন্টার এর আমন্ত্রণে ইজরাইলী ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের ড. ইউনুসকে এটি প্রদান করেন। মিস হেদভা সের ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক কূটনীতি বিষয়ক গুইউইল অ্যাম্বাসেডর, কিন্তু ইউনেস্কোর কোনও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধি নন এবং ইউনেস্কোর কোন পুরষ্কার/ সম্মাননা দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না।’ সুতরাং, উল্লিখিত বাস্তবতার নিরিখে, বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত ইউনূস সেন্টার কর্তৃক প্রেরিত এবং প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতারণামূলক বলে মনে করে তার নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশ ইউনেস্কোর অন্যতম সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র। ভবিষ্যতে ইউনেস্কোর মতো জাতিসংঘের এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং সুখ্যাতিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম অপব্যবহার থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ইউনূস সেন্টারকে সতর্ক করা হলো। এই বিষয়টি যেহেতু প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার ব্যাখা চাওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের আদালত ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের আরো তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয় মাসের কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন, যেটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। এছাড়াও আয়কর আইন লঙ্ঘনের জন্য তার ব্যক্তিগত আয়কর দাবী আদালতে বিচারাধীন। সুতরাং, তিনি যতদিন আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত নন, ততদিন তাকে কোন মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার কিংবা সম্মাননা প্রদান সমীচীন নয় বলেও উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশে ইউনেস্কোর সাথে কার্যক্রমের জন্য সরকারের ফোকাল পয়েন্ট হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন। কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে কেউ যাতে ইউনেস্কোর নামের অপব্যবহার কিংবা অপপ্রয়োগ না করতে পারে- সেটি নিশ্চিত করা। সে হিসেবে ইউনেস্কোর নাম অপব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে ইউনেস্কো ঢাকা অফিস এবং ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির সাথে পরামর্শ করে ইউনেস্কো সদর দপ্তরকে অবহিত করা হবে।

বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ নস্যাৎ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বৈরাচারের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, মূল্যবোধ ও গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি নেতৃবৃন্দের মিথ্যাচার ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি প্রদান করা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপিই এ দেশে গণতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নের প্রধান প্রতিবন্ধক। বিএনপি নেতৃবৃন্দের উচিত ছিল তাদের অগণতান্ত্রিক কর্মকা-ের জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা। অথচ তারা সেটা না করে বরাবরের ন্যায় দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা আজ যখন গনতন্ত্র নিয়ে কথা বলেÑ তখন বুঝতে হবে, তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য তাদের মায়াকান্না ছাড়া আর কিছু নয়। গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্রের জন্য তাদের এই আহাজারি মূলত একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবনের অধিপতি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়নের বরপুত্র তারেক রহমানের দুঃশাসনের যুগে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। এদেশের গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক নাগরিক সমাজ এই অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে আজ ঐক্যবদ্ধ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বৈরাচার জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল। জাতিকে মিরপুর ও মাগুরা মার্কা উপ-নির্বাচন উপহার দিয়েছিল বিএনপি! নির্বাচনে কারচুপি করে ক্ষমতাদখলের পাঁয়তারায় আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিল বিএনপি। তিনি বলেন, অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে তখন বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের উপর অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়াবহ নজির স্থাপন করা হয়েছিল। ২০০১ পরবর্তী সময়কালে বিএনপি-জামাত জোট শাসনামলে ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশ স্বপ্নের পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট কাল রাতে মানবসভ্যতার ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করা হয়েছিল। পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, একইভাবে হন্তারকের দল ৩রা নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। সেদিন ঘাতকচক্র অসহায় নারী, শিশুকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। সেদিন কোথায় ছিল গণতন্ত্র? কোথায় ছিল মানবাধিকার? ১৯৭৫-এর নৃশংসতম হত্যাকা-ের পর খুনি জিয়ার হাতে জন্ম নেওয়া বিএনপি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে- ইতিহাস তখন বিদ্রুপের হাসি হাসে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ইতিহাসের নিষ্ঠুর সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে অসাংবিধানিক পন্থায় বন্দুকের নলের মুখে জাতিকে জিম্মি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। বিচারপতি সায়েমকে জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে সরিয়ে দিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি পদ দখল করেছিল। তিনি বলেন, ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ-না ভোটের প্রহসনের নির্বাচনের নামে দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। জিয়ার তথাকথিত গণতন্ত্র ছিল কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র! লাগাতার সামরিক শাসন বলবৎ রেখে জনগণের উপর দুঃশাসনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছিল। স্বৈরাচার জিয়ার হাতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি এদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ধারণ করে চলেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৯৭৮ সালের ৩ জুন একই সাথে সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করে গণতন্ত্রকামী জনগণের সঙ্গে নির্মম তামাশা করেছিল স্বৈরাচার জিয়া, অবৈধভাবে একই সঙ্গে সেনাপ্রধান, প্রধান সামরিক আইন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। স্বৈরাচার জিয়া পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছিলÑ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে করেছিল নির্বাসিত।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ময়মনসিংহে  পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত

আজ ২৬ মার্চ, ৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের দিন, পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন। দীর্ঘ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের মাঝে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সারাদেশের ন্যায় ময়মনসিংহে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিনব্যাপী কর্মসূচী সমূহের অংশ হিসেবে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভসূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের পর নগরীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সকালে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে প্রথমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া। এছাড়াও পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি মো: শাহ আবিদ হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, ময়মনসিংহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানসহ প্রমুখ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তার অঙ্গ সংগঠন, ময়মনসিংহের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিগণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন স্তরের জনগণ। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ৮:০০টায় নগরীর রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সম্মিলিত কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়। অভিবাদন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া, ময়মনসিংহ-রেঞ্জ ডিআইজি মো: শাহ আবিদ হোসেন, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী এবং পুলিশ সুপার মাসুম আহাম্মদ ভূঞা। এ সময় উপস্থিত অতিথিগণ জাতীয় সংগীতের সাথে পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে জেলার পুলিশ দল, ব্যাটেলিয়ন আনসার, আনসার ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস সহ জেলার বিভিন্ন স্কুল প্রতিষ্ঠানের স্কাউট দল অভিবাদন মঞ্চে উপস্থিত অতিথিগণদের কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন করেন এবং জেলার নওমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি শিশু পরিবার, বিদ্যাময়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন স্কুল প্রতিষ্ঠান তাদের শারীরিক কসরত উপস্থাপন করেন। আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি ময়মনসিংহের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান তাঁর নেতৃত্বে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মাইজদী শহরে সূলভ মূল্যে গর মাংস ডিম ও দুধ বিক্রি উদ্বোধন। 

আল মামুন চৌধুরী নোয়াখালী জেলা প্রশাসন, প্রাণীজ সম্পদ বিভাগ যৌথভাবে মাইজদী শহরে সূলভ মূল্যে গরুর মাংস, ডিম ও দুধ বিক্রি শুরু করেন। জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবর রহমান সকাল সাড়ে ১১ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এ সময় জেলা প্রাণীজ সম্পদ কমকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আবুল কালাম আজাদসহ পৌরসভা কমকর্তা, প্রাণীজ সম্পদ বিভাগের বিভিন্ন কমকর্তা, টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, সুশীল সমাজ উপস্থিত ছিলেন। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, ১ লিটার দুধ ৮০ টাকা ও এক ডজন ডিম ১১০ টাকা বিক্রি করা হয়। এ সময় নারী পুরুষ লাইন ধরে সংগ্রহ করতে দেখাগেছে। তবে গ্রাহকেরা জানিয়েছে যদিও তারা দায়ে পড় সংগ্রহ করছেন, ভাল হত বাজারে দাম কমাতে মনিটরিং জোরধার করা। আবার কিছু গ্রাহক সন্তুষ্ট হয়েছেন। পৌরসভা কমকর্তারা জানিয়েছেন রোজায় মানুষের সুবিধা কথা ভেবে যৌথভাবে এ আয়োজন করা হয়। জেলা প্রাণীজ সম্পদ কমকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, বেশ কিছুদিন আমাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

আইএসআইকে সন্তুষ্ট করতে রাজাকারের সন্তানরা ভারত বিরোধীতা করছে

মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানীদের আইএসআইকে সন্তুষ্ট করার জন্য জনবিচ্ছিন্ন বিএনপির নেতারা ভারত বিরোধীতার জিকির তুলছে বলে মন্তব্য করেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেছেন, রিজভী সাহেবের বাবা ছিলেন পাকিস্তান পুলিশে কর্মরত। পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। আরেকজন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; যার বাবা চোখা মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় চোখা রাজাকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রকাশিত দলিলে রয়েছে। পুরো পাকিস্তানের সংকট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল তাতে বলা হয় ১৯৭১ সালে পহেলা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পযন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেছে। আমরা আজো তারস্বরে চিৎকার করছি আমরা গণহত্যার স্বীকৃতি চাই। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করে, কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত আমাদের পবিত্র সংবিধানকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তারা হত্যা করেছে। আমার ধর্মনিরপেক্ষতাকে হত্যা করে। আমাদের গণতন্ত্র সামরিক ছাউনিতে বন্দী হয়ে যায়। এই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের লড়াই করতে হয়েছে। কোন বাংলাদেশে লড়াই করতে হয়েছে? প্রশ্ন তুলে নানক বলেন, যে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী খুনী ডালিম শাহরিয়ার নূর মোশতাকরা বিচরণ করেছে। সেই বাংলাদেশে আমাদের গণতন্ত্রের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লগাই করতে হয়েছে। যে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পরাজিত হয়েছিল, সেই মানবতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। কারণ জিয়াউর রহমান তাদেরকে পুনর্বাসন করেছিল। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নানক বলেন, এই বাংলাদেশটি দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ উল্টো পথে চলেছে। বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ভাষণের রেকর্ড তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই ভাষণ আমরা যারা বাজানোর চেষ্টা করেছি, আমাদেরকে পুলিশ পিটিয়েছে, অত্যাহার করেছে ,গ্রেফতার করেছে। এই তো ছিল ২১ বছরের বাংলাদেশ! সেই বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই বাঙালি জাতি ভোট ও ভাতের অধিকারের আন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। তাই আজকের প্রজন্ম এই বাংলাদেশের স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে বলে দাবি করেন তিনি। গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে সম্প্রীতি বাংলাদেশকে জাতীয় ও  আন্তর্জাতিকভাবে জাগরণ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, এই গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় করতে হলে শুধু আমাদের দেশে নয় আন্তর্জাতিকভাবে সমস্ত বাঙালীদের মাঝে জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। বাইরে অবস্থানরত বাঙালীদেরও এই দিবসটি পালনের জন্য সচেতন করতে হবে। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছিলাম এখনো বেঁচে আছি। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস স্বীকৃতি হিসাবে লাভ করলে আত্মতৃপ্তি নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারতাম। সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব ড. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। সম্মানীয় আলোচক হিসাবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত সম্প্রীতি বাংলাদেশ, কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্রাহাম লিংকন, একুশে পদকপ্রাপ্ত শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু গবেষক মেজর (অবঃ) আফিজুর রহমান।

Header Advertisement
Advertisement
Advertisement
Header Advertisement
ফুলপুরে প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে টিসিবি’র পণ্য  বিতরণ

ফুলপুরে প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে টিসিবি’র পণ্য বিতরণ

সেকান্দর আলী (স্টাফ করেসপন্ডেট) বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ তারিখে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ, বি. এম আরিফুল ইসলাম উপজেলার পয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এ সময় পরিষদে টিসিবির বিভিন্ন পণ্য সরকারী ভর্তুকি মূল্যে বিতরণ হচ্ছিল । উপজেলা অফিসার লক্ষ্য করে দেখেন এখানে অনেক মানুষের জটলা। জটলা পেরিয়ে পরিষদ ঘরে ঢুকে তিনি কার্ডদারীদের সাথে ও টিসিবির ডিলারের সাথে কথা বলেন এবং পণ্যের গুণগত মান ও ওজন পরীক্ষা করেন। কিছু নির্দেশনা দিয়ে, নিজ হাতে কয়েকজন কে পণ্য নিজ হাতে তুলে দেন এবং কড়া হুসিয়ারী দেন টিসিবির পণ্য সঠিকভাবে বিতরণের জন্য। উপজেলার ইমাদপুর বাসস্ট্যান্ডেে গিয়ে একই ভাবে পণ্যের মান ও ওজন পরীক্ষা করে নিজ হাতে কয়েকজনকে পণ্য বিতরণ করেন । উপস্থিত লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে বলেন, কোন সমস্যা হলে সরাসরি ইউএনওকে জানাবেন। প্রদশর্নের সময় দেখা গেল পচা চাউল ও ওজন কম নেই। সুন্দর ঝকঝকে খাবার উপযোগী চাউল এবং মানসম্মত অন্যান্য পণ্য উপজেলা অফিসার এ বি এম আরিফুল ইসলাম ফুলপুরে যোগদান করার পর থেকে সার চোরাচালানী, টিসিবি, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে মান নিয়ে আপোষ করেন না। তিনি ডিসেম্বর ২০২৩ এর ২৬ তারিখ ফুলপুরে যোগদান করেছেন। মাত্র তিন মাসে তিনি ফুলপুরে অনেক উন্নতি সাধন করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সর্বদাই সচেষ্ট। সাংবাদিক, বিশিষ্ট সমাজসেবক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ সবার সহযোগিতা চাই এবং সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।

ন্যাটোর ব্যাপক মহড়া স্নায়ুযুদ্ধে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে : রাশিয়া

ন্যাটোর ব্যাপক মহড়া স্নায়ুযুদ্ধে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে : রাশিয়া

রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকসান্ডার গ্রুশকো রোববার বলেছেন, ন্যাটোর স্টিডফাস্ট ডিফেন্ডার ২০২৪ মহড়া স্নায়ুযুদ্ধের পরিকল্পনায় চূড়ান্ত ও অপরিবর্তনীয় প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। ইতোপূর্বে ন্যাটোর ইউরোপ অ্যালাইড সুপ্রিম কমান্ডার জেনারেল ক্রিস্টোফার ক্যাভোলি, আগামী সপ্তাহের নির্ধারিত মহড়াটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও কয়েক মাস ধরে চলবে বলে ঘোষণা করেন। খবর সিনহুয়ার। গ্রুশকো বলেন, এই মহড়াগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিম যে হাইব্রিড যুদ্ধ চালিয়েছে তার আরেকটি উপাদান। তিনি বলেন, ৩১টি দেশের ৯০ হাজার সেনা সদস্য এই ধরনের মহড়া পরিচালনা করে ন্যাটো নিশ্চিত ও অপরিবর্তনীয়ভাবে শীতল যুদ্ধের পরিকল্পনায় প্রত্যাবর্তন করেছে। সামরিক পরিকল্পনার সম্পদ ও অবকাঠামো রাশিয়াকে মোকাবিলার জন্য তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে গ্রুশকো বলেন, এটি অনুশীলনের পেছনের এ ধারণাই সঠিক। তারা সমস্ত কর্মক্ষম ডোমেন ও যোগাযোগ অঞ্চলের সমস্ত ফ্রন্টে একটি তুলনীয় প্রতিপক্ষের সাথে সংঘর্ষের সম্ভাব্য পরিস্থিতি অনুশীলনের একাধিক কৌশল ও ড্রিলকে অন্তর্ভুক্ত করবে।

Header Advertisement
Header Advertisement