ঝালকাঠি জেলার এলজিইডির উন্নয়ন কাজ গুলো আওয়ামী লীগ আমলে গত ১৫ বছর নিয়ন্ত্রণ হয়েছে আমির হোসেন আমুর চার খলিফার মাধ্যমে এরা হলেন মনির হুজুর,মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স, জিএম জাকির, মুনমুন এন্টারপ্রাইজ, কামাল শরীফ, এমপি বিল্ডার্স, সুরুজ চেয়ারম্যান, শান্ত এন্টারপ্রাইজ।এই দীর্ঘ সময়ে মধ্যে এলজিইডি থেকে বিভিন্ন প্রজেক্ট এর মাধ্যমে চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। দাপ্তরিক খরচা বাবদ কিছু অংশ পেয়েছে দপ্তরের কাজ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গুণগত মান ও কাজের সাইড পরিদর্শন করে দেখা গেছে গত ১৫ বছরে সড়ক নির্মাণ,উন্নয়ন কাজ ও প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজের বেহাল দশা। বেশিভাগ সড়কগুলো এখনো যান চলাচলে অনুপযোগী ও ভবনগুলো ভগ্ন দশায়, সবমিলিয়ে এগুলো সংস্কার কাজ আবার সরকারকে খরচ দিতে হবে কোটি কোটি টাকা।গত ১৫ বছরে ঝালকাঠি এলজিইডি অফিসে আমির হোসেন আম্মুর সিন্ডিকেটের বাইরে কেউ কোন কথা বলা তো দূরের কথা কোন দপ্তরে ঢুকতে পারেনি এই সিন্ডিকেটের হোতারা নিয়ন্ত্রণ করত পুরো ঝালকাঠি এলজিইডির উন্নয়ন কাজ সহ অন্যান্য দপ্তরের কর্মকাণ্ড।এদের বাইরে ওই দপ্তরে কোন ঠিকাদার প্রবেশ ছিল অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা। সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আমিন চার খলিফার এই সিন্ডিকেট কে বিভিন্ন উপায়ে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও বঞ্চিত ঠিকাদারদের। এই জেলার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রুহুল আমিন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুকে কৌশলে ম্যানেজ করে ঠিকাদারী কাজ এককভাবে ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে তার অনুগত ঠিকাদারদের মধ্যে বন্টন করতেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বঞ্চিত ঠিকাদারগণ। ঝালকাঠি জেলার পাঁচ বছর এক মাস কর্মকালীন সময়ে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিল ঠিকাদাদের মধ্যে প্রদান করেন । যা থেকে তিনি ওয়ান পার্সেন্ট কমিশন নিলেও ২০ কোটি টাকার অধিক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে স্থানীয় ঠিকাদার ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারীরা বলেন।বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শহীদুল ইসলাম সরকার বিগত দুই অর্থবছরে বিল প্রদান করেন প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলীক এ বিষয়েও কথা বলেন।এলজিইডি র তৃণমূল পর্যায়ে কাজ তদারকিতে ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে গাফেলতি ও উন্নয়ন কাজের গুণগত মান সঠিক না রাখায় উন্নয়ন কাজ টেকসই হয় না,এছাড়াও ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন নেয়ার বিষয়ে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী জানান,এ ধরনের কোন অভিযোগ আমার কাছে নেই তবে ঠিকাদারদের স্বার্থে কোন ব্যাঘাত ঘটলেই তারা এ ধরনের অভিযোগ করেন। এছাড়া প্রতিটি স্কিমের কাজের গুণগতমান ঠিক রাখার বিষয় উপজেলা প্রকৌশলী দায়িত্বরত কর্মকর্তা। এ বিষয়গুলো মূলত উপজেলা প্রকৌশলী দেখে থাকেন। অপর এক প্রশ্নে বলা হয়, উপজেলা প্রকৌশল দফতরের দায়িত্বরত প্রকৌশলী গন বিল প্রদানের জন্য এমবি লেখার সময় ২% কমিশন উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ কমিশন নিয়ে থাকেন এবং নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তরের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার সময় টু পার্সেন্ট কমিশন এবং বিল প্রদানের সময় সাড়ে তিন শতাংশ কমিশন দিতে হয়
।বিষয়টি আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন ? মো: শহিদুল ইসলাম সরকার বলেন ,অফিসের কথাটি সঠিক নয় তবে নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তরে ঠিকাদারদের কাজ নেয়ার সময় কাগজপত্রের কিছু প্রক্রিয়া থাকে সেক্ষেত্রে ঠিকাদার খুশি হয় কিছু খরচাপাতি দিয়ে থাকেন এর বাইরে অন্য কিছু নয়।নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তরে অনেক ধরনের খরচাপাতি হয় এ খরচ গুলো আমরা জোর করে কারো কাছ থেকে নেই না ।এগুলো আমরা নিয়ম তান্ত্রিক ভাব মেইনটেইন করে থাকি।অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঝালকাঠি জেলার চার খলিফা এ জেলার এলজিইডি অফিসে এখন আর আসে না, তাদের কাজগুলো তাদের অধীনস্থ ম্যানেজার ,সুপারভাইজার ও অন্যান্য লোকদের মাধ্যমে পরিচালনা করে।সে ক্ষেত্রে স্থানীয় বিএনপির লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে কাজ গুলো বাস্তবায়ন করছেন ।তবে শুনেছি ঝালকাঠি জেলার বিএনপির ঠিকাদার ফিরোজ আকন সহ আরো বিএনপি`র কিছু লোকজন নেপথ্যে এদের সার্বিক সহযোগিতার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। পাঁচই আগস্ট এর প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে , এক্ষেত্রে আমির হোসেন আমুর আলোচিত চার খলিফা সকলেই পালিয়েছেন।তিনি আরো বলেন,বিগত ১৫ বছরে ঝালকাঠি জেলায় চার পাঁচ জন ঠিকাদারের বাইরে অন্য কোন ঠিকাদার কাজ করতে পারে নাই। বর্তমানে আমরা অপশাসন ,অনৈতিক হস্তক্ষেপ, প্রভাব মুক্তহীন হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি ।তবে বিগত সময়ের কাজগুলো আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে, ঝালকাঠি জেলাকে যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকে উন্নত জেলা হিসেবে পরিচিত করতে চাই।