সুন্দরবনে তৃতীয় দফায় বাঘ গণনার ফল প্রকাশ করেছে বন মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ফলাফল ঘোষণা করে জানান, ২০২৩-২৪ সালে সুন্দরবনে পরিচালিত বাঘ জরিপে বাঘের সংখ্যা ১২৫টি পাওয়া গেছে। প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটার বনে বাঘের ঘনত্ব পাওয়া গেছে ২ দশমিক ৬৪।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা বলেন, প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন-আইইউসিএন বাঘকে বাংলাদেশের অতিবিপন্ন প্রাণি হিসেবে উল্লেখ করেছে। ২০১৩ সালে বিশ্বে ১৩টি টাইগার রেঞ্জ কান্ট্রি ছিল। এখন বিশ্বের ১০টি দেশে বাঘ অবশিষ্ট আছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ আছে। আর ভিয়েতনাম কম্বোডিয়া লাওসের বনাঞ্চল থেকে বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী বর্তমানে বাঘের সংখ্যা ৩ হাজার ৮৪০টি বলেও জানান উপদেষ্টা।
এর আগে ২০১৫ সালে পরিচালিত জরিপে ১০৬টি এবং ২০১৮ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছিল ১১৪টি। সেই হিসাবে ২০২৮ সালের তুলনায় বাঘের সংখ্যা এবার ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালের তুলনায় ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়েছে।
বাঘ গণনার কার্যক্রম ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত চলেছে বলে জানান উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান। তিনি জানান, তৃতীয় ধাপে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরাকে ৪ জোনে ভাগে হয়েছে জরিপ। তাতে বাঘ বৃদ্ধি পাওয়া তথ্য মিলেছে। প্রতি দুই কিলোমিটারে পায়ের ছাপ দেখে হয়েছে গণনা। ১ হাজার ২০০-এর বেশি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ নিরূপণ হয়েছে সংখ্যা।
এবারের জরিপে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাঘ শাবকের ছবিও পাওয়া গেছে। তবে সেগুলো জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এবারের জরিপে ২১টি বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গেছে। আগের জরিপগুলোতে ৫টি করে বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গিয়েছিল। তবে এগুলোকে গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কারণ বাঘ শাবকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে বনভূমি ৪ হাজার ৮৩২ এবং জলাভূমি ১ হাজার ১৮৫ বর্গকিলোমিটার। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারির তথ্য অনুযায়ী, বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪।
এসএটি/আরএইচ