ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৩ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের রাজধানীর শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে তোফাজ্জল হত্যায় জড়িত ৩ শিক্ষার্থীকে আটক করে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়।
জানা যায়, আটকৃতদের মধ্যে ছাত্রলীগের একজন সাবেক নেতাও আছেন। তার নাম জালাল আহমেদ। তিনি ছাত্রলীগের উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি শুরুর পর তিনি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন।
বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের সামনে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয় তোফাজ্জল হোসেনকে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে জানা যায়, তোফাজ্জল একজন মানসিক রোগী ছিলেন।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে ৭ সদস্যের কমিটি।
বৃহস্পতিবার তোফাজ্জলকে হত্যার অভিযোগে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র তাঁকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানায়। পরবর্তী সময়ে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাঁকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। পরে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পিছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পরে।
এজাহারে আরও বলা হয়, এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দিবাগত রাত পৌনে ১টার সময় তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।