পৃথিবীতে প্রায় ১০ হাজারের মতো পাখির প্রজাতি রয়েছে। বাংলাদেশের পাখির তালিকায় মোট ৭৪৪টি পাখি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ সমস্ত পাখির মধ্যে গত দুই শতকে বাংলাদেশে ছিল এবং বর্তমানে আছে এমন পাখিও অন্তর্ভুক্ত। দেশে-বিদেশে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রজাতির পাখি আবিষ্কৃত হচ্ছে। এবার নতুন করে আবিষ্কার হয়েছে দুর্লভ পাখি কাস্তেচরা। সহজে এদের দেখা মেলে না। এরা মৃদু আওয়াজে ডাকাডাকি করে। প্রজনন ঋতুর সময় অনেকটা গাধা বা ছাগলের ডাকের মতো ডাকতে থাকে। এটিই হলো এই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
এই পাখিটি সম্পর্কে জানা গেছে, দৈর্ঘ্য সাধারণত ৪৮ থেকে ৬৬ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। এদের ডানা ৮০ থেকে ১০৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। লেজের দৈর্ঘ্য ৯ থেকে ১১ সেন্টিমিটার এবং দেহের ওজন ৪৮৫ থেকে ৯৭০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। আকার অনেকটা গৃহপালিত মুরগির মতো। আকারে ছোট। এদের মাথায় পালক থাকে এবং সরু ঠোঁট নিচের দিকে বাঁকানো।
এই পাখি প্রজনন ঋতুতে দেহের উপরের অংশ গাঢ় বাদামি এবং দেহের নিম্নাংশ ও ডানা উজ্জ্বল সবুজ রঙের মতো দেখায়। এদের বিচরণ ক্ষেত্র খাল, বিল, হ্রদ, নদী, খাড়ি ও লবণাক্ত জলাভূমি। এরা মাংসাশী। এরা কীটপতঙ্গ এবং শূককীট খেয়ে জীবন ধারণ করে। এরা বেশিরভাগ সময় মার্চ থেকে অক্টোবরের মধ্যে এবং বর্ষার আগে প্রজনন করে। তবে এরা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে বসন্তকালে বংশবৃদ্ধি করে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে বর্ষাকালে প্রজনন করে থাকে।
এরা মাটি থেকে ৬-১২ মিটার উচ্চতায় গাছপালা, নিচু গাছ বা ঝোপের মধ্যে বাসা তৈরি করে বংশবৃদ্ধি করে। এরা একবারে ৩ থেকে ৪টি নীলাভ সবুজ ডিম পাড়ে। মা-বাবা দুজন মিলে ৩০ থেকে ৩৩ দিনের মধ্যে ডিম ফোটায়। বাচ্চারা ৭ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে আকাশে উড়তে পারে।
সম্প্রতি কাস্তেচরা পাখির ছবি তুলেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও শৌখিন আলোকচিত্রী ড. তুহিন ওয়াদুদ। এই পাখির ছবি তুলতে যাওয়ার দ্বিতীয় দিন ১২ বার পরিবহন পরিবর্তন করতে হয়েছে । তবুও যাত্রা ছিল ক্লান্তিহীন। তবে ছবি তোলার পরে সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে শৌখিন এই আলোকচিত্রীর।