অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংলাপ করেছেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। সংলাপে রাষ্ট্র সংস্কারে স্বল্প মেয়াদে বাংলাদেশ লেবার পার্টির পক্ষ থেকে ১৮ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংলাপে বাংলাদেশ লেবার পার্টির ১৮ প্রস্তাব:
১. কালোবাজারি সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, টিসিবি, ভোক্তা অধিকার ও ট্যারিফ কমিশনে সক্রিয় ও রেশনিং ব্যাবস্থা চালু করা।
২. আগস্ট বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী ১৭ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত আহত ও নিখোঁজের তালিকা প্রকাশ করে আর্থিক সহযোগিতা ও প্রতি পরিবার থেকে অন্তত ১ জনকে চাকরি প্রদান। আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
৩. অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারে কাজের পরিকল্পনা ও নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রকাশ করা।
৪. গণহত্যাকারী হাসিনার ফ্যাসিবাদ ও ভোটাধিকার হরণে জড়িত ১৪ দল ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার ও বিচার করা।
৫. সরকারের কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা ও আস্থা বাড়াতে বিতর্কিত ও অনভিজ্ঞ উপদেষ্টাদের অপসারণ করে রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে দক্ষ, কর্মঠ ও অভিজ্ঞদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের পরিসর বাড়ানো।
৬. শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আমলে দুর্নীতি, লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া মাফিয়া, অর্থপাচারকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ এবং গত ১৫ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
৭. সরকারি বিভিন্ন দফতরে গত ১৫ বছরে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত দলবাজ, দুর্নীতিবাজদের অপসারণের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ এবং সরকারি-আধা সরকারি চাকরিতে মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে নিয়োগের সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি ও নিয়োগ কমিশন গঠন করে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সব নিয়োগ প্রদান।
৮. রদবদলের নামে ডিসি-এসপিসহ পুলিশ ও প্রশাসনে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ।
৯. দুদক পুনর্গঠন করে উপযুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে শক্তিশালী দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করা।
১০. যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধাসহ ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে গার্মেন্টস ও পণ্য রফতানির সুযোগ সৃষ্টিসহ নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান করে জি টু জি পদ্ধতিতে বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠানো।
১১. সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে স্থায়ী ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আইন প্রবর্তন ও সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা।
১২. সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবসরের ৫ বছরের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ বেআইনি ঘোষণা করা।
১৩. জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী দল বা জোটকে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ৫১% ভোট প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, অন্যথায় নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।
১৪. রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে নিয়োগের বিধান প্রবর্তন ও নির্বাচনী আচারণ বিধি প্রতিপালনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান।
১৫. জাতীয় পরিচয়পত্র আইন ২০২৩ বাতিল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচন কমিশনে রাখা।
১৬. রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে।
১৭. দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও সংসদের মেয়াদ চার বছর করা।
১৮. যে সব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই, সেখানে দূতাবাস সেবা প্রদান ও আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।
এসএটি/জেডএম