বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এবং ১২দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেছেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর অর্জিত বিজয়কে নস্যাতের সকল ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা ছাত্র-জনতা এবং দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক শক্তি সম্মিলিতভাবে মূলোৎপাটন করবে।
তিনি বলেন, যেকোন মূল্যে জুলাই আগস্ট বিপ্লবের চেতনাকে সমুন্নত রেখে দীর্ঘ ১৬ বছরের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বিজয়কে সংহত ও সমন্বিত করে দেশকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের শাসন কায়েমের ধারায় এগিয়ে নিতে হবে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী অপশক্তির সকল অপতৎপরতা নস্যাৎ করে দিতে জাতি প্রস্তুত।
শনিবার (০২ নভেম্বর) বিকালে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দিঘীরপাড় ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন আয়োজিত মানবিক সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণ ও দেশনায়ক তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ উপর অনুষ্ঠিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হুদা বলেন, আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের ভবিষ্যদ্বাণী ছিল শেখ হাসিনার পতনের পরে দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। অন্তত পাঁচ লক্ষ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করা হবে! তাদের এই ধারণার কারণ ছিল তাদের অত্যাচার নির্যাতন লুটপাট খুন গুম আয়না ঘরের অসংখ্য নজিরবিহীন ঘটনা। তারা অনুমান করেছিল তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত একটি ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে! সৌভাগ্য বাস্তবে ৫জন নেতা কর্মীকেও হত্যা করা হয়নি! বিরোধী দল এবং অত্যাচারিত জনগণ সংযমের পরিচয় দিয়েছে!
তিনি বলেন, অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে সংহত করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করে দেশকে সম্প্রীতির মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হবে। সবশেষ এবং সবচেয়ে বড় অপচেষ্টা ছিল আন্দোলনমুখি দলগুলোর মধ্যে সংঘাত বাধিয়ে দেয়া বিশেষ করে জামায়াত এবং বিএনপিকে দুই মেরুতে নিয়ে মাঝ থেকে আওয়ামী লীগকে আবার উঠে আসার ব্যবস্থা করা। আলহামদুলিল্লাহ আওয়ামী বিরোধী শক্তিগুলো ফাঁদ বুঝতে পেরে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা এবং সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনে। এই মুহূর্তে জাতি আরও সুসংহত সুসংবদ্ধ।
দেশের মানুষ আবার নিরব নিরাপত্তাবোধের উষ্ণতায় উজ্জীবিত। বিজয়ী শক্তিকে বিভাজিত করার অপচেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপির এবং জামায়াত উভয় পক্ষই অনুধাবন করতে পেরেছে আওয়ামী অপশক্তি এবং ভারত প্রশ্নে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলো একই দৃষ্টিভঙ্গি লালন করে।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপি জামাতের ঐক্য আওয়ামী অপশক্তিকে পরাজিত করেছে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি জামাতের বিচ্ছিন্নতার সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। ২০২৪ সালে একই ভুল করতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত সম্বিৎ ফিরে এসেছে।
হুদা বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিঙ নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিরপেক্ষ এবং যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের ক্ষমতা জনগনের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বাজিতপুর ও নিকলির জনগণকে দেশবিরোধী সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে সজাগ ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
বাজিতপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনিসুর রহমান খোকনের সঞ্চালনায় ও দিঘীরপাড় ইউনিয়ন বিএনপি'র সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ কোষাধ্যক্ষ মশিউর রহমান রাসেল, কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, পিরিজপুর ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক সভাপতি ফারুক সিদ্দিকী, পিরিজপুর ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মুজিবুর রহমান, কিশোরগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য এডভোকেট নাসিরুজ্জামান, আজিতপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম আশরাফ, বাজিতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল মাহমুদ, ইডলি উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিন মাহমুদ ও আরিফ, রফিকুল ইসলাম লিটন, ইউনিয়ন বিএনপি'র সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন প্রমূখ।
এসএটি/এসএইচ