স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের BDIRWSP প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আদনান আক্তারুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এলজিইডি তে চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই অনৈতিক পথে অর্থ উপার্জন সহ নানাবিধ অবৈধ অপকর্ম ও ক্ষমতাসীনদের দ্বারস্থ হয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধের জন্য সচেষ্ট থেকেছেন। উপজেলা প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে অবৈধ ও অনৈতিক পন্থায় অর্থ উপার্জনই ছিল তার একমাত্র উদ্দেশ্য যা তিনি সিদ্ধ হস্তে বাস্তবায়ন করেছেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন কালীন সময় ঠিকাদারদের কাজে ওভার পেমেন্ট, ডুপ্লিকেশন ও টেন্ডারিং পদ্ধতিতে ঘাপলার মাধ্যমে নিজে বিশাল অর্থ বৃত্তের মালিক বনে গেছেন। পরবর্তী পর্যায়ে পরিচয় হন পিরোজপুর জেলার সাবেক সংসদ সদস্য মহারাজ এবং তার ছোট ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিরাজুল ইসলাম এর সাথে।
এদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার মাধ্যমে তিনি BDIRWSP প্রকল্প টি বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন। দক্ষিণ অঞ্চলেও সর্ববৃহৎ এই প্রকল্প তৈরি করেন প্রকল্প পরিচালক মোঃ রুহুল আমিন খান কিন্তু পরবর্তীতে এই প্রকল্পের জন্য তিনজন সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী নাম প্রস্তাব করে তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী মন্ত্রণালয় প্রেরণ করেন,কিন্তু অলৌকিকভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোহাম্মদ আদনান আক্তারুল আলম প্রস্তাবে নাম না থাকা সত্ত্বেও পিরোজপুরের ক্ষমতাধর তৎকালীন ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইফতি ইটিসিএল প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলামের মাধ্যমে সমস্ত নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দান করে।
পরবর্তীতে এলজিইডি তে নিজেকে একজন ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে পরিণত করেন, তার ইশারা ছাড়া এল জি ডি ই তে অনেক কিছুই হত না এ কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইফতির মালিক মোঃ মিরাজুল ইসলামকে সব ধরনের অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দিতে থাকেন।এছাড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি স্কিম এবং অনৈতিকভাবে রিভাইস অনুমোদনের জন্য মোটা অংকের কমিশন বাণিজ্য শুরু করেন এবং দক্ষিণ অঞ্চলেও প্রতিটি জেলায় ঠিকাদারী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। পিরোজপুর জেলায় ইফতি ইটিসিএল প্রাইভেট লিমিটেড, বরিশাল জেলায় মাহফুজ খান,কোহিনূর এন্টারপ্রাইজ,ভোলা জেলায় মোঃ পিটারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, ঝালকাঠি জেলার মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স।
এভাবে দক্ষিণ অঞ্চলেও আওয়ামীপন্থী বেশ কিছু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়ে তিনি একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন এবং মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি তিনটি প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করেছে।অন্য দায়িত্বরত প্রকল্প দুটি হল BJP ও IBRP ।
এই প্রকল্প দুটিতেও তিনি অনৈতিক পন্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব নেন। কিন্তু এলজিইডি তে অনেক সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী গন দীর্ঘদিন কোন প্রকল্পের দায়িত্ব না পেয়ে প্রধান কার্যালয়ে ওএসডি র দায়িত্ব পালন করছেন। যা সম্পূর্ণ চাকরির বিধি-বিধান লঙ্ঘিত।
এলজিইডি তে মহারাজ মিরাজের হাজার কোটি টাকার লোপাটের নেপথের নায়ক মোহাম্মদ আদনান আক্তারুল আলম। তার অধীনস্থ প্রকল্পের পিরোজপুর জেলার স্কিনগুলোর সমস্ত টেন্ডার প্রক্রিয়া,অর্থ বরাদ্দ, বিল প্রদানসহ স্কিম গুলো সরজমিনে পরিদর্শনপূর্বক নিরীক্ষা করলেই সমস্ত অন্যায়, অনৈতিক অপকর্মের প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে। উদাহরণস্বরূপ ঝালকাঠি জেলায় BDIRWSP প্রকল্প ধীন,রোড আইডি নং 542402001, স্কিম বরাদ্দ ২৫ কোটি টাকার অধিক, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইসলাম ব্রাদার্স এভাবে কাজ পেয়েছেন ২৮ কোটি টাকার অধিক, কিন্তু নাম প্রকাশে এলজিডির এক প্রকৌশলী জানান, উল্লিখিত স্কীমটির প্রকৃত ব্যয় হতে পারে ১৬ কোটি প্লাস, অথচএই অতিরিক্ত দেয়া ১০-১১ কোটি টাকা প্রকল্প পরিচালক আদান ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স ভাগ বটোরা করে নিয়েছেন বলে জানান, এইভাবে মোহাম্মদ আদনান আক্তারুল আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন তিনটি প্রকল্পের প্রতিটি স্কিমে এইভাবে মোটা অংকের কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে অনুমোদন দিয়েছেন যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক মোঃ আদনান আক্তারুল আলম তিনি বলেন,সাবেক প্রধান প্রকৌশলী অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দুইটা প্রকল্প দিয়েছেন,মূলত মন্রনালয়ের অনুমতিতে একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হয়েছি।পিরোজপুর জেলার ইফতির প্রোপাইটর মোঃ মিরাজুল ইসলামের সাথে বিভিন্ন ঠিকাদারী কাজ সংশ্লিষ্ট লেনদেনের বিষয় বা কমিশন বানিজ্যের গভীর সম্পর্ক বিষয়ে বলেন,তাদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। প্রাককলন অনুমোদনের বিষয় কমিশন নেয়ার যে অভিযোগ আছে এ ব্যাপারে তিনি বলেন,আমি এ ধরনের কোন কমিশন নেই না জেলা থেকে যেসব স্কিম পাঠায় ওগুলো আমি অনুমোদন দেই।