আল আমিনের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার ৪ নং সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইসলাম পুরে।বাবার নাম মৃত ইউসুফ আলী। বাবা সারাদিন রাজমিস্ত্রি কাজ করে ও রাত্রে ফুটপাতে পিঠা বিক্রি করে সংসার চালাতেন।
দুই ভাই এক বোনের মধ্যে আলআমিন ছিল সবার বড়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, আল আমিনের বয়স যখন মাত্র ২ বছর হয় তখনই তিনি টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চোখের দৃষ্টি হারান।
এভাবেই আল আমিন বড় হতে লাগলো। আলআমিনের বয়স যখন ১৮ তখনই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। পরের বাড়িতে কামলা দিয়েই (স্থানীয় ভাষা) চলতে থাকে আল আমিনের জীবন। এভাবে চলতে চলতে তাহার ঘরে জন্ম নেয় পাঁচ সন্তান। দুই ছেলে তিন মেয়ে। উত্তরাধিকারী সূত্রে বাবার কাছ থেকে মাত্র দুই শতাংশ বসত ভিটার জমিই তাহার একমাত্র সম্পদ।
পাঁচ সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে আলআমিনের অভাব যেন বেড়েই চলল। বাবার কাছ থেকে পাওয়া দুই শতাংশ জমির উপর টিনের ছাপরার অবস্থা অত্যন্তই নাজুক। স্ত্রী মনিরা স্থানীয় একটি ইটের ভাটায় হাতে ধরে স্বামীকে নিয়ে যেয়ে ইট ভাঙ্গার কাজে লাগিয়ে দেয়।
স্বামীর সারাদিন ইট ভাঙ্গা কাজ শেষ হলে আবার হাত ধরে বাড়িতে নিয়ে আসে মনিরা । স্ত্রী মনিরা স্বামীর শারীরিক অবস্থা ভালো না দেখে এবং সংসারে এত দুঃখ দেখে সিদ্ধান্ত নেয় একটি চায়ের দোকান দেবে। ঠিক তাই করল, হালুয়াঘাট হইতে ময়মনসিংহ হাইওয়ে রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকানের ব্যবস্থা করল। সারাদিন স্ত্রী মনিরা চা বিক্রি করেন। সাহায্যকারী হিসেবে তার সাথে
থাকে দুই সন্তান একটির নাম জামেলা আরেকটির নাম রাবিয়া।
আলআমিন এখন প্রচন্ড দুশ্চিন্তায় আছেন, তিনি জানতে পেরেছেন যে, রাস্তার পাশে চায়ের দোকান থেকে চলে যেতে হবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , পাঁচ সন্তান ও স্বামী-- স্ত্রী মিলে সাতজনের সংসারে অভাব যেন তাদের নিত্য সঙ্গী।
প্রতিবন্ধী আলআমিনের সর্বশেষ আবদার হল, আমার দুই শতাংশ জমি রয়েছে এই জমির উপরে যদি কোন দানশীল ব্যক্তি বা সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকিব এবং দোয়া করিব। তিনি বলেন, আমি ঘরের জন্য খুব কষ্টে আছি।